জনপ্রিয় ফলগুলোর মধ্যে পেয়ারা অন্যতম এবং এটি একটি সহজ লভ্য ফল, আর এতে রয়েছে অনেক পুষ্টি আসুন জেনে নেই
জনপ্রিয় ফলগুলোর মধ্যে পেয়ারা অন্যতম এবং এটি একটি সহজ লভ্য ফল, আর এতে রয়েছে অনেক পুষ্টি আসুন জেনে নেই আমাদের প্রতিপালক এই ফলের মাঝে কি কি ভিটামিন ও উপকারিতা দিয়ে সজ্জিত করেছেন —
খাদ্যউপাদানঃ
আঁশ, পানি, কার্বোহাইড্রেট,
প্রোটিন, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘কে’,
পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস,
ক্যালসিয়াম, ফলেট ইত্যাদি রয়েছে। তবে
গোলাপি রঙের পেয়ারায় পুষ্টিগুণ বেশি।
এটি একটি ভিটামিন ’সি’ সমৃদ্ধ ফল। এ
ছাড়া এতে প্রচুর পরিমান ভিটামিন-বি ও
প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য পেয়ারা ফলে রয়েছেঃ
শ্বেতসারঃ ১৪.৫%,
প্রোটিনঃ ১.৫%,
লৌহঃ ১.০%,
ক্যালসিয়াসঃ ০.০১%,
ভিটামিন বি-১: ৩০.০ মিঃগ্রাঃ,
রিবোফ্লোভিনঃ ৩০.০ মিঃগ্রা,
ভিটামিন-সিঃ ২৯৯.০ মিঃগ্রাঃ,
ক্যালরীঃ ৬৬ মিঃগ্রাঃ।
উপকারিতাঃ
পেয়ারায় ইনফেকশনরোধী উপাদান
থাকায় ডিসেন্ট্রি প্রতিকারে, হজমক্রিয়া
শক্তিশালী করতে এবং গ্যাস্ট্রো-এন্টারাইটিস
রোগে বিশেষ উপকারী।
পেয়ারায় যথেষ্ট পরিমাণে পেকটিন থাকায় তা
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং উচ্চ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
অ্যাজমা, ঠাণ্ডা- কাঁশিতে কাঁচা পেয়ারার জুস
বেশ উপকারী।
দাঁতব্যথা, দাঁতের ক্যারিজ, মাড়ি ফোলা,
স্কার্ভি, মুখের ঘা ইত্যাদিতে পেয়ারা ওষুধরূপে
কাজ করে।
পেয়ারায় অ্যান্টি-অঙ্ডোন্ট, লাইকোপেন ও
খাদ্য আঁশ থাকায় ব্রেস্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি
বন্ধ করে এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
এ ছাড়া কিছু ক্রনিক রোগ প্রতিহত করে,
যেমন:হৃদরোগ, ক্যাটাড়্যাক্ট, রিউমাটয়েড
আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি।
খিঁচুনি, এপিলেপসি প্রতিকারে পেয়ারা বেশ
উপকারী।
রক্তের সঞ্চালনে ঘাটতি এবং দীর্ঘমেয়াদি
মিনস্ট্রুয়েশনে পেয়ারা কার্যকরী ভূমিকা
রাখে।
ওজন কমাতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, রুচি
বাড়াতে পেয়ারার জুড়ি নেই।
পেয়ারা ফলে যথেষ্ঠ পরিমাণে পেকটিন থাকায়
এ থেকে সহজেই জ্যাম, জেলী, চাটনী ইত্যাদি
মুখরোচক খাবার তৈরী করা যায়।
একটি পেয়ারায় প্রায় ১০৩০ ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিট ভিটামিন-এ,
৩৭৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি রয়েছে।
উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ ও ‘সি’ ত্বক, চুল ও
চোখের পুষ্টি জোগায়, ঠান্ডাজনিত অসুখ দূর
করে।
পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চার, যা
তারুণ্য বজায় রাখে দীর্ঘদিন, ত্বকের রুক্ষ
ভাব দূর করে ও শীতে পা ফাটা রোধ করে।
পেয়ারার জ্যাম ও জেলি জ্যাম কিংবা জেলি
তৈরির প্রথম প্রয়োজনীয় উপাদান ফলের
পেকটিন, যা পেয়ারায় যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
ফলে পেয়ারার তৈরি জ্যাম/ জেলি কেবল
সুস্বাদুই নয়, স্বাস্থ্যসম্মত ও উপকারী।
যেমনঃ
জ্যাম/জেলিতে পেকটিন রয়েছে বিধায় নানা ক্যান্সার হওয়ার সুযোগ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
রক্তের কোলেস্টেরল ও ফ্যাটের মাত্রা কমায়।
মুখের রুচি বাড়াতে সহায়ক।
পেয়ারার ভিটামিন-এ ছোটদের রাতকানা রোগ
ভালো করে।
তবে বাচ্চারা পেয়ারার বিচি হজম করতে পারে না।
তাই তাদের বিচি বাদ দিয়ে পেয়ারা
খাওয়ানো উচিত।
একটা পেয়ারায় রয়েছে চারটি কমলালেবুর সমান
পুষ্টি।
তাই সপ্তাহে অন্তত একটি হলেও পেয়ারা
খাওয়া উচিত।
পেয়ারার খোসায় রয়েছে আঁশজাতীয় উপাদান।
পেয়ারার ভেতরেও রয়েছে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর করে ও পাকস্থলীর ক্যানসার দূরীকরণে
রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
পেয়ারায় রয়েছে ক্যারটিনয়েড, পলিফেনল,
লিউকোসায়ানিডিন ও অ্যামরিটোসাইড নামক
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শরীরের ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
ত্বককে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে
রক্ষা করে। ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা
বৃদ্ধি করে।
মন্তব্য